ঢাকা , রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ , ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
দ্বৈত নাগরিক সরকারি চাকুরেদের সন্ধান চলছে চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মুখে আগুন ভোটে একমঞ্চে লড়বে ইসলামি দলগুলো মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় যা আছে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ ঊর্ধ্বমুখী সবজিও সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফিরবেই-ছায়ানট দিনেদুপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি, স্বর্ণালংকার লুট কিশোরগঞ্জে মেঘনায় গোসল করতে নেমে দুই বোনের মৃত্যু নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু আশা করি ড. ইউনূস কথা রাখবেন- সেলিমা রহমান লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৬৭ বাংলাদেশি ৩ মাসে বন্ধ ৬৪৮ ইটভাটা জরিমানা ২৪ কোটি বাড়ির পাশে মিলল মা-ছেলেসহ ৩ জনের বস্তাবন্দি মরদেহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, বাড়িঘর-দোকান ভাঙচুর চাঁদপুরে আগুনে পুড়েছে ১৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গুর তীব্র ঢেউয়ের শঙ্কা প্রতিরোধে প্রস্তুতি নেই অন্ধকার থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার বার্তা চীনের পাল্টা শুল্কে মার্কিন বাজারে ধস আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল
* ভারতে ঢোকার অনুমতি পায়নি পাঁচ ট্রাক তৈরি পোশাক * আমরা কোনো সমস্যাবোধ করছি না : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল, বিপাকে রফতানিকারকরা

  • আপলোড সময় : ১১-০৪-২০২৫ ১১:৫৪:১৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৪-২০২৫ ১১:৫৪:১৯ অপরাহ্ন
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল, বিপাকে রফতানিকারকরা
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় বিপাকে পড়েছেন রফতানিকারকরা। স্থল বন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে পণ্যবোঝাই ট্রাক। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি ট্রাক স্থলবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।  পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তৈরি পোশাকবোঝাই ট্রাককে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। এতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ট্রাকগুলো ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে যেসব পণ্য শুধু ভারতে রফতানি করা হয়, সেগুলো পাঠানো যাচ্ছে।
ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা দিতে ২০২০ সালের ২৯ জুন আদেশ জারি করেছিল ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) গত মঙ্গলবার সেই আদেশ বাতিল করে। বেনাপোল কাস্টমসের কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, মঙ্গলবার ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক রফতানিকারক তিনটি প্রতিষ্ঠান চারটি ট্রাকে পণ্য বোঝাই করে বেনাপোল বন্দরে নিয়ে আসে। ঐ পণ্য কলকাতার দমদম বিমানবন্দর হয়ে স্পেনে রফতানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারতের ঐ সিদ্ধান্তের পর কার পাশ ইস্যু করা হয়নি। ফলে পণ্যগুলো ভারতে প্রবেশের অনুমতি পায়নি। এতে পণ্যগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফিরিয়ে নিয়েছে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবারও একটি পণ্যবোঝাই ট্রাককে কার পাশ ইস্যু করা হয়নি। তিনি আরো জানান, যে সব পণ্য শুধু ভারতে রফতানির জন্য এসেছে, সেগুলো বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যেতে পারছে।
বেনাপোলে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান বলছে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ ভারত সরকার ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। এর আগেই ট্রাকবোঝাই এসব পণ্য বেনাপোল বন্দরে চলে আসে। পণ্য ঢুকতে না দেয়ায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ও আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। এই সুবিধা বাতিলের এক দিন আগেও ২০ ট্রাক তৈরি পোশাক তাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত তৈরি পোশাকের রফতানি গ্রীষ্মে বাড়ে। এখন রফতানির ভরা মৌসুম। এই মুহূর্তে ভারতের এই সিদ্ধান্তে তারা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ২০২০ সালের ২৯ জুন এক আদেশে ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধা দেয়া হয়েছিল। তখন বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পণ্য রফতানিতে ভারতের কলকাতা বন্দর, নবসেবা বন্দর ও কলকাতা বিমান কার্গো কমপ্লেক্স ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছিল সিবিআইসি। এখন সে সুবিধা প্রত্যাহার করল ভারত।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে রফতানিকারকরা জানান, বেনাপোল দিয়ে ভারতের ট্রানজিট নিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেসব পণ্য রফতানি করা হয়, তার বেশির ভাগ যায় ইউরোপের দেশগুলোয়। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে স্পেন ও সুইজারল্যান্ডে বেশি যায়। এই বন্দর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য রফতানি কম হয়। বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) তথ্য অনুসারে, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের একটি বড় অংশ ভারত হয়ে নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হতো। এখন তারাও সমস্যায় পড়েছেন। বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করার ফলে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রফতানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এখন তারা পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ভারত হঠাৎ করে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করলেও বাংলাদেশের সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, আমাদের সকল অংশীজন নিয়ে মিটিং করেছি। ইনশাআল্লাহ, এটাতে আমরা কোনো সমস্যাবোধ করছি না। আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা, প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় যাতে কোনো ঘাটতি না হয় এবং আমাদের রফতানির ক্ষেত্রে যাতে যোগাযোগের কোনো ঘাটতি না পড়ে-সেক্ষেত্রে আমরা সব ব্যবস্থা নিচ্ছি, আমি আশা করি, এটা আমরা উতরে যাব। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সমস্যা সমাধানে ভারতকে কোনো চিঠি দেয়া হবে কি না? জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা এই মুহূর্তে বিবেচনা করছি না। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় আমাদের যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আছে, সেগুলো কিছু কাঠামোগত, কিছু খরচের দিক থেকে-সব জিনিস সমন্বয় করে আমরা সক্ষমতা বৃদ্ধি করব। আমি এখানে কোনো সমস্যা দেখছি না।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন মাসের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক সাময়িক স্থগিতাদেশ বাংলাদেশের জন্য তাৎক্ষণিক স্বস্তি এনে দেবে। এটি আমাদের আরো আলোচনা করার সময় দেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্টের সুবিধায় আমাদের এখান থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টনের মতো পণ্য সড়কপথে ভারতের বিভিন্ন বন্দর বিশেষ করে দিল্লি, কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে রফতানি হতো। আমরা আশা করি, এই ম্যাটেরিয়ালগুলো বহনের জন্য নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সমস্যা অতি দ্রুত সমাধান করব। এসব পণ্য সাধারণত ইউরোপীয় দেশগুলোতে যেত বলে তিনি জানান। বাংলাদেশ ভারতীয় ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিট সুবিধা বাতিলের মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে পারে কি না, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উপদেষ্টা বলেন, এটা আমার বিচারাধীন নয়। আমার উদ্বেগ হচ্ছে, সক্ষমতা উন্নয়ন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স